যশোর প্রতিনিধি।। ২৫ ধরনের পাখির বাসা বানাতে পারেন গৌরঙ্গর পরিবাব
বাঁশ, নারকেলের ছোবড়া, পাট, শুকনা খড়, বিচালি, বাঁশ পাতা, খেজুরের ছাল, লতা, বেত, নেটের জাল, প্লাাস্টিক পাইপ ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পাখির বাসা। এসব আবার ইউরোপের জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও পর্তুগালের বিভিন্ন শহরের সৌখিন পাখি উৎপাদনের খামারে যাচ্ছে।
জানা গেছে, ইউরোপের বাজারে যশোরের দাসপাড়া, ধলিগাতী, এড়ান্দা, আবাদ কচুয়া গ্রামে তৈরি শৌখিন পাখির বাসার চাহিদা রয়েছে। গ্রামটিতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বারান্দা ও আঙিনায় বসে পাখির বাসা বুননের কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। পুরুষেরা তৈরি করছেন পাখির বাসা বুননের মূল উপকরণ। নারীরা বাসা তৈরির জো তুলছেন। শ্রমিকেরা একসঙ্গে বসে বাসা তৈরির কাজ শেষ করছেন।
যশোর সদর উপজেলার চাউলিয়া, দাসপাড়া গ্রামের উদ্যোক্তা গৌরঙ্গ চন্দ্র দাস ঢাকা থেকে ব্যবসায়ীদের পাঠানো নমুনা দেখে পাখির বাসা তৈরি করেন। প্রায় ২শ শ্রমিকের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্ডার পাওয়া পণ্যগুলো রফতানি উপযোগী করে ঢাকায় পাঠান তিনি। এগুলো পরে ঢাকার ব্যবসায়ীরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দেন।
কাজের ফাঁকে গৌরঙ্গ চন্দ্র দাস বলেন, ‘৩৫ বছর হলো পাখির বাসা তৈরির কাজ করছি। ২৫ ধরনের পাখির বাসা বানাতে পারি। আমাদের সারাবছর ব্যস্ততা থাকে। ঢাকা থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী আমাদেরকে কাজ দেয়। পাইকারি দামে এসব পাখির বাসা কিনে নিয়ে তারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দেয়।’
গৌরঙ্গ চন্দ্র বলেন, ‘এখন বিদেশী ক্রেতা বাড়ছে। অনেকেই এই শিল্পকর্ম শিখেছেন। তবে পুঁজির সংকটের কারণে এ পণ্যের রফতানি বাণিজ্যে যতটা প্রসার ঘটার কথা ছিল, ততটা ঘটেনি। সরকারি সহযোগিতা পেলে এবং নিজেরা সরাসরি রফতারি করতে পারলে এ শিল্পের মাধ্যমে আরও বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হত।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাধন কুমার দাস বলেন, এখানকার পণ্যগুলো দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও রফতানি করা হচ্ছে। দেশি-বিদেশি অনেক ব্যক্তিবর্গ এখানে এসে পরিদর্শন করে এসব পণ্য দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা ও বিস্তার ঘটানোর জন্য শ্রমিকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিলে এবং সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পেলে আরো ভালো কিছু সম্ভব।
যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম.মুনিম লিংকন বলেন, ‘ইউরোপের ছয়টি দেশে রফতানি হচ্ছে যশোরে তৈরি শৌখিন পাখির বাসা। পাখির বাসা ঘিরে অনেক বেকার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ন বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ তাসরিফ/নরসিংদী জার্নাল