রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি।। সুপরিকল্পিতভাবে নারী দিয়ে প্র’তারণা চক্রের ৬ স’দস্য আ’টক
রাজশাহীতে পরিকল্পিতভাবে নারী দিয়ে প্রতারণা চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা বিভিন্নভাবে প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ ও অশ্লীল ছবি তুলে ছড়ানোর হুমকি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করতো বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে, রোববার (২৪ জুলাই) দিনগত রাতে নগরীর বোয়ালিয়া থানার মথুরডাঙ্গা ও চন্দ্রিমা থানার আসাম কলোনী বৌ-বাজার এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা, অপকর্মে ব্যবহৃত একটি চাকু ও ছিনতাইকৃত একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- নগরীর মথুরডাঙ্গা এলাকার সাইদুর রহমানের ছেলে সিহাবুল ইসলাম শিলু (২১), তার স্ত্রী আসমা আফিয়া অহনা ওরফে অধরা (২১), আসাম কলোনী রবের মোড় এলাকার মাইনুল হক বাবলুর ছেলে স্বাধীন (২১), শিরোইল কলোনীর সাহেব আলীর ছেলে সাগর আলী (২২), আসাম কলোনী বৌ-বাজারের মামুনুর রশিদের ছেলে মেহেদী হাসান মিম (২১) ও হাজরা পুকুর ডাবতলার রমজান আলীর মেয়ে প্রিয়া আক্তার মায়া ওরফে টুসু (১৯)।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪/৫ মাস পূর্বে অহনা নামের একটি মেয়ের সাথে ইকবালের (ছদ্মনাম) ফেসবুকে পরিচয় হয়। কিছুদিন মোবাইলে ও মেসেঞ্জারে কথা হওয়ার সুবাদে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। নগরীর বন্ধ গেটসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা করতো তারা। এক পর্যায়ে অহনার বান্ধবী মায়ার সাথে পরিচয় হয় ইকবালের।
পরে গত ২০ জুলাই রাতে অহনা তার বান্ধবী মায়ার ফোন থেকে ইকবালকে দেখা করার জন্য শিরোইল কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আসতে বলে। ইকবাল এসে তাদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে আসামীরা লোহার রড, জিআই পাইপ, চাকু ইত্যাদি নিয়ে ইকবালকে ঘিরে ধরে জোরপূর্বক স্কুলের মাঠে নিয়ে যায়।
সেখানে এলোপাথাড়ি চর-থাপ্পড়, কিলঘুষি মেরে এবং চাকুর ভয় দেখিয়ে তার পকেটে থাকা নগদ ৩৭ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। তার নগ্ন ছবি উঠিয়ে মান-সম্মানের ভয় দেখিয়ে বিকাশ, রকেট ও নগদের পিন নম্বর নিয়ে নেয়। এছাড়াও মুক্তিপণ বাবদ আরও ৫ লক্ষ টাকার জন্য পরিবারের লোককে বলার জন্য চাপ দিলে তার এক বন্ধুর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে নেয় এবং আসামিরা নিজেরাই সে টাকা উঠিয়ে নেয়। এ ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।
রফিকুল আলম জানান, ইকবালের নামের ওই ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েলের তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে একটি টিম নগরীর মথুরডাঙ্গা ও আসাম কলোনী বৌ-বাজার এলাকায় পৃথক অভিযান চালায়।
অভিযানকালে ওই ৬ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। তারা দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন শ্রেণীর সহজ সরল ব্যক্তিদের নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে অপহরণ পূর্বক নারী দ্বারা অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে, জিম্মি করে মুক্তিপন ও চাঁদা আদায় করে আসছিল।
এসময় ভয়ভীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা, অপকর্মে ব্যবহৃত একটি চাকু ও ছিনতাইকৃত একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। আসামীদের বিরুদ্ধে চন্দ্রিমা থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ন বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ তাসরিফ/নরসিংদী জার্নাল