মেয়েকে না পেয়ে প্রেমিকের মা’কে পু’ড়িয়ে প্রানহানি
এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ন বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ তাসরিফ/নরসিংদী জার্নাল
প্রেমের টানে বাড়ি থেকে প্রেমিক সিরাজুলের সঙ্গে পালিয়ে যায় আঁখি আক্তার। ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও মেয়ের ফিরে না আসায় ছেলের বাড়িতে যায় আঁখির বাবা। মেয়েকে না পেয়ে ছেলের মাকে খুন করার পরিকল্পনা করেন।
এরপর ছেলের মায়ের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান সিরাজুলের মা।
গত ২৬ জুন ছেলের প্রেমের কারণে মাকে এভাবে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহ জেলার চর ঈশ্বরদীয়া পূর্বপাড়া গ্রামে।
ঘটনার পর আসামিরা পলাতক থাকলেও পরে মেয়ের বাবা খোকন মিয়া ও মা নাসিমা আক্তারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অব ব্যুরো (পিবিআই)। মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজধানী রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই হেডকোর্য়াটার্সে গ্রেফতারদের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা পিবিআই পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি সায়েদুর রহমান।
তিনি বলেন- সামাজিক অবক্ষয়ের ফলে সন্তানের প্রেমের বলি হতে হয়েছে মাকে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দাহ্য পদার্থ দ্বারা পুড়িয়ে হত্যা করা হয় লাইলী বেগমকে।
ফেনীর নুসরত হত্যার প্রসঙ্গ টেনে সায়েদুর রহমান বলেন, নুসরাতকেও দাহ্য পদার্থ দ্বারা নৃশংশভাবে হত্যা করা হয়। একইভাবে এই মামলার ভুক্তভোগীকে দাহ্য পদার্থ দ্বারা পুড়িয়ে হত্যা করা হয় যা সমাজের জন্য ভীতিকর।
ময়মনসিংহের ঘটনা বর্ণনা করে সায়েদুর রহমান বলেন, পালিয়ে যাওয়া আঁখিকে ফিরে পেতে সিরাজের বাবা-মাকে চাপ দিতে থাকেন আঁখির বাবা খোকন ও মা নাসিমা আক্তার। মেয়েকে না পেলে ছেলের পরিবারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
১০ দিন পার হলেও মেয়ে ফিরে না আসায় গত ২৮ জুন খোকন মিয়া ছেলে সিরাজের বাসায় গিয়ে তার বাবা-মাকে গালাগাল করতে থাকে। ওই সময় সিরাজের বাবা আব্দুর রশিদ বাড়িতে ছিলেন না।
এই সুযোগে মেয়ের বাবার সঙ্গে যাওয়া লোকজন সিরাজের মায়ের মুখ চেপে ধরে হাত, পা বিদ্যুতের কালো তার দিয়ে বেঁধে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে যায়। দ্রুত উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক লাইলীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় রেফার্ড করেন। পরে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লাইলীর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ২৮ জুন সিরাজের বাবা আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে আঁখির বাবা-মাকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত খোকন ও নাসিমা জানায়, তাদের পরিকল্পনায় সিরাজের মাকে পুড়িয়ে হ’ত্যা করা হয়। ঘটনাটি বাস্তবায়ন করার পর তারা আত্মগোপনে চলে যায়। মেয়েকে ফেরত না পেয়ে ছেলের মাকে পুড়িয়ে হ’ত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান।
এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ন বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ তাসরিফ/নরসিংদী জার্নাল