নিউজ ডেস্ক, নরসিংদী জার্নাল || মাশরুম চাষ করে রিজন আজ পেয়েছেন অসামান্য সাফল্য।
গাইবান্ধার প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে রিজন। ঢাকা এক বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করতেন। করোনার প্রথম ঢেউয়ে টিকতে পারলেও দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগেই চাকরি হারিয়ে বেকার হলেন।
বাবা-মা, দুই ভাইয়ের সংসারে প্রণবের একার রোজগার’ই ভরসা। শেষমেশ, অভাবের সংসারে রোজগারের পথ দেখালো মাশরুম। আজ এই যুবক মাশরুম চাষ থেকে শুধু যে অর্থ উপার্জন করছে তাই নয়, বরং আয় করছেন প্রচুর অর্থ সাথে অন্যদেরও উতসাহিত করছেন (Mushroom farming) মাশরুম চাষে।
মাশরুমের চাহিদা: মাশরুম হচ্ছে মূলত এক ধরনের ছত্রাক। এটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। আমাদের দেশের বড় বড় শহরগুলোর বিভিন্ন হোটেল ও চাইনিজ হোটেলগুলোতে মাশরুমের চাহিদা আছে। তাই আপাত দৃষ্টিতে মাশরুমের বাজার মূলত শহরে গড়ে উঠেছে। বিদেশে এর চাহিদা রয়েছে। এটি শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
এর আলাদা কদর রয়েছে ঔষধি গুণসংবলিত সবজি হিসেবে গোটা পৃথিবীতেই । বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে প্রতিনিয়ত কৃষিজমির পরিমাণ কমে চলেছে, সেখানে কৃষি সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি মাধ্যম হতে পারে মাশরুম চাষ। কারণ এর উৎপাদনে অতিরিক্ত জমির প্রয়োজন হয় না।বাড়ির উঠান অথবা ঘরের মধ্যে ছোট জায়গায় স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত সস্তা উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমেই এটি উৎপাদন করা যায়।
মাশরুম চাষ (Mushroom cultivation): মাশরুম চাষে খুব বাড়তি মূলধনের প্রয়োজন হয় না। উৎপাদনে সময় কাল লাগে অনেক কম। এর জন্য বিশেষ কোনো প্রযুক্তিরও প্রয়োজন নেই। এমনকি কোনো ধরনের রাসায়নিকেরও প্রয়োজন হয় না।
মাশরুম চাষ সে হিসেবে বলা যায়, গ্রাম ও নগরের প্রান্তিক ও স্বল্প আয়ের দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য বিকল্প আয়ের উৎস্য হয়ে উঠতে পারে। একই সঙ্গে তা হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত লাভজনক ও আকর্ষণীয় কৃষিনির্ভর ক্ষুদ্র উদ্যোগ।
রাজশাহীর নিতান্ত গৃহবধূ হাফিজা বিবি। স্বামী কাজ করতেন কেরালায় রাজমিস্ত্রির, লকডাউন পরবর্তীতে আর কাজে ফিরতে পারেননি। ছেলে-মেয়ে-স্বামী নিয়ে অভাবের সংসারে রোজগারের আশা দেখিয়েছে সেই মাশরুম। এ’রকম ভাবেই সমাজের আর্থ-সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষদের বিকল্প রোজগারের পথ দেখাচ্ছে মাশরুম চাষ।
ইতিহাস বলছে, প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরীয়রা মাশরুমকে মনে করতো অমরত্বের উৎস্য। সে সময় এক রাজকীয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য মাশরুম উৎপাদন ও গ্রহণ নিষিদ্ধ করেছিল ফারাওরা। প্রাচীন আমলের ইউরোপে বেশ জনপ্রিয় ছিল মাশরুম চাষ।
রোমানদের কাছে দেবতার খাবার ছিল এটি। কয়েক হাজার বছর ধরে চীন ও জাপানে ঔষধি হিসেবে মাশরুম ব্যবহার হয়ে আসছে। শুধু ইউরোপ বা এশিয়া নয়, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায়ও মাশরুম খাওয়ার মূলত ছিল। সেখানে বিশেষ ধরনের রহস্যময় গুণসংবলিত খাবার হিসেবে ছত্রাকটির বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। প্রাচীন কালে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী আচার-অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় কৃত্যে ব্যবহার হতো মাশরুম।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাসরিফ/ নরসিংদী জার্নাল