শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন

মাত্র ১২ হাজার টাকা থেকে পোল্ট্রি খামার করে নিজাম এখন কোটিপতি

রাব্বি মল্লিক / ২০৮৮ বার
আপডেট : সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

রাব্বি মল্লিক,নিজস্ব প্রতিবেদনঃ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জের পোল্ট্রি খামারী নিজাম মাত্র ১২ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে তিনি পোল্ট্রি খামার করে বর্তমানে জেলার অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠিত পোল্ট্রি ব্যবসায়ী। বর্তমানে তার পোল্ট্রি খাতে বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।

১৯৯৭ সালে স্থানীয় কলেজে বিএসএস (ডিগ্রি) শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন নিজাম। শখের বসে তার নিজ বাড়ীর পাশে একখন্ড জমিতে গড়ে তোলেন এই পোল্ট্রি খামার। পুঁজি ১২ হাজার টাকা। পড়াশোনার পাশাপাশি খামারে ব্রয়লার মুরগীর লালন পালন চলছিলো ভালভাবে। তার নিজ এলাকার চন্দ্রগঞ্জ বাজারে একটি দোকান নিয়ে শুরু করেন ব্রয়লার মুরগীর খুচরা বিক্রি।

১৯৯৮ ঢাকার লায়ন এগ্রো অফিসে তিন দিনব্যাপি পোল্ট্রি বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নিয়ে তিনি মুরগি পালন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন। এতে তার মুরগি পালনে আরো আগ্রহ বেড়ে যায়। ছেলের পরিশ্রম, আগ্রহ ও পোল্ট্রি খামারের ব্যবসার ভাল অবস্থা দেখে বাবা হোসেন আহমেদ পুঁজি দিলেন আরো ৭০ হাজার টাকা। সেই থেকে বাড়তে থাকে তার ব্যবসা। খামারের প্রসার লাভে তাকে সার্বণিক সহযোগিতা করেন তার ছোট ভাই শাহাবুদ্দিন।

তার সাথে সাথে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর পোল্ট্রি খাদ্য ও মেডিসিনের ডিলার নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন সোনালী ফিডস্ এন্ড চিকস্। উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের জাউডগা গ্রামে ১০ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে মমতাজ এগ্রো ইন্ডাট্রিজ। এখানে রয়েছে লেয়ার মুরগি ও মৎস্য খামার। এ খামারে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার ডিম উৎপাদন ও মৎস্য খামার থেকে বিক্রি করা হয় বছরে ১০ লাখ টাকার মাছ ।

এ ছাড়া তার আরো কয়েকটি মুরগির খামারে দৈনিক ডিম উৎপাদন হয় ৮ থেকে ৯ হাজার । শুধু ডিম বিক্রি হয় দৈনিক ৪৪ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এ লেয়ার খামারগুলো গড়ে তৈরি করা হয়েছে সদর উপজেলার নূরুল্লাপুর, জকসিন, বসুরহাট, চন্দ্রগঞ্জের লতিফপুর, বেগমগঞ্জ উপজেলার আমিন বাজার।

এ ছাড়া সদর উপজেলায় ৫৫টি ব্রয়লার মুরগী খামারে তার বিনিয়োগ রয়েছে। এসব খামারের মালিককে সম্পূর্ণ বাকিতে বাচ্চা, খাদ্য ও মেডিসিন দেয়া হয়। পরে বাচ্চা পরিপূর্ণ হলে তা বিক্রি করে খামার মালিকরা নিজামের বকেয়া পরিশোধ করেন।

ব্রয়লার মুরগি ও লেয়ারের ডিম লক্ষ্মীপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলা নোয়াখালী ও ফেনীতে সরবরাহ হয়ে থাকে। নিজামের প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ায় প্রায় পঁয়ত্রিশটি পরিবারে আসে স্বচ্ছলতা। ৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাসিক বেতন দেয়া হচ্ছে আড়াই লাখ টাকা। কঠোর পরিশ্রম, মেধা ও কাজের প্রতি একনিষ্ঠতা থাকলে স্বল্প পুঁজি নিয়েও যে ভাগ্য বদল করা যায় তার বাস্তব প্রমাণ নিজাম।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাংলাদেশ খবর মিডিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। রাব্বি মল্লিক/এনজে

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ