ছবি সংগ্রহীত
মাগুরা সদর উপজেলার মঘী ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি গ্রামের এক যুবককে প্রেমিক দাবি করে বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে আসমা আক্তার নামের এক তরুণী। ওই তরুণী সঙ্গে মাকেও এনেছেন।
মা ও মেয়ের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত যুবক তাজনুর ও তাঁর পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে শনিবারের (৪ জুন) মধ্যে এ বিষয়ে কোনো সমাধান না হলে তরুণী আইনের আশ্রয় নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টা থেকে আসমা আক্তার এবং তার মা এই অনশন শুরু করেন।
ওই তরুণীর মা ছাকিরুন বেগম জানান, আমি ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করি। এই মেয়ের বাবার সঙ্গে আমার অনেক আগে ডিভোর্স হয়েছে। তার বাবা অন্য জায়গায় বিয়ে করেছে। তারপর থেকে আমিই ওর বাবা ও মা। এখন এই ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়েছে বলে আমি জানি।
ছেলে আমার মেয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করেছে। এখন আমার মেয়ে তাকে বিয়ে করতে বলেছে। কিন্তু ছেলে রাজি থাকলেও তার পরিবার রাজি না। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ওই ছেলের পরিবারের কেউ আমাদের কিছু জানায়নি।
স্থানীয় মাতবররা আমাদের চাপ দিচ্ছেন, যেন আমরা চলে যাই। বিয়ে না দিলে থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নেব। আজ ঢাকায় চলে যাব। আগামীতে ছুটি নিয়ে আবার আসব। বিয়ে না দিলে আইনের আশ্রয় নেওয়া ছাড়া আমাদের আর পথ নেই।
ছাকিরুন বেগম বলেন, এর আগে আমার মেয়ে একা এসেছিল বিয়ের দাবিতে। এখন আমি এসেছি। তারা তখন কথা দিয়েছিল অভিভাবক আনলে তারা কথা বলবে। আমি তাই ছুটি নিয়ে মেয়ের সঙ্গে এখানে এসেছি। এই বারান্দায বসে আছি কেউ কথা বলছে না। মেয়ের বিয়ে না দিয়ে আমিও এখান থেকে যাব না।
ওই তরুণী বলেন, তাজনুরের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। এর প্রায় এক সপ্তাহ আগে বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকিও দিয়েছিল ১৭ বছরের তরুণী। তবে সে সময় তরুণী একাই বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে ১২ ঘণ্টা অনশন করে।
তিনি আরও জানান, ছেলে রাজি আছে বিয়ে করতে। তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু তার বাবা -মা কেউ রাজি না। তারা আমাকে পছন্দ করে না। না করুক, আমার দরকার ছেলেকে। তারা বিয়ে দিলেই তো সব ঠিক হয়ে যায়। বিয়ে না দিলে এবার আমার মাও এখান থেকে যাবে না।
ছেলের চাচা পল্লী চিকিৎসক বাবুল হোসেন জানান, ছেলের বাবা মা গ্রামেই আছে। লোকলজ্জার ভয়ে আপাতত আড়ালে আছে তারা। তাই আমি আমি ওই তরুণী ও তার মায়ের সঙ্গে কথা বলছি। এখানে ছেলের বাড়িতে মেয়েসহ তার মা চলে এসেছে। কিন্তু এভাবে বিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি তারা যেন এখান থেকে চলে যায়। ছেলের বাবা-মা এ বিয়েতে রাজি না। যুবকের চাচা বাবুল হোসেন অভিযোগ করে আরও বলেন, তারা বিয়ের দাবিতে এলেও ছেলের চাচাতো ভাই সাগরকে ঢাকায় আটকে রেখেছে। বিয়ে না দিলে সাগরকে তারা ছাড়বে না বলে জানিয়েছে। আমরা এবার খুব বিপদে পড়ে গেছি।
ছেলের চাচাত ভাই সাগরকে আটকে রাখার বিষয়টি মেয়ে ও তার মা স্বীকার করে বলেন, এই সাগর সবকিছুর জন্য দায়ী। সে সব জানে। আমাদের প্রমাণ সে। এজন্য তাকে ঢাকায় নিরাপদে আটকে রেখেছি।এখানে বিয়ে হলে তাকেও ছেড়ে দেবো।
এ বিষয়ে মঘী ইউনিয়নের ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তোরাব আলী বলেন, এমন একটা ঘটনা আমি শুনেছি। একটা মেয়ে নাকি বিয়ের দাবিতে এলাকায় তার মাসহ এসেছে। আমাকে যদি ডাকে, তাহলে আমি সেখানে যাব। এ বিষয়ে সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দিলে তারা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন
সূত্র বিডি২৪লাইভ