স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার আনোয়ারা বেগম (৭৮) বয়স্ক ভাতা তুলে আসছিলেন। তিনি জীবিত। কিন্তু সমাজসেবা অফিসের তালিকায় তাকে হঠাৎ মৃত দেখানো হচ্ছে। আর এ কারণে ওই নারীর বয়স্ক ভাতাও বন্ধ হয়ে গেছে।
তিন মাস পর বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভাতা উত্তোলন করতে গিয়ে জানতে পারেন তিনি ‘মৃ ত্যুবরণ’ করেছেন। তাই ভাতা বাতিল করেছে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা তুলতে এসে নিজেকে মৃত জানতে পেরে হতবাক হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। আনোয়ারা বেগম উপজেলার টগরবন্ধ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার ভাতা বই নম্বর ৬১০।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৭৮৬ জন প্রতিবন্ধী, এক হাজার ৭২৬ জন বিধবা ও চার হাজার ৬ জন বয়স্ক ভাতা সুবিধাভোগীকে তিন মাস পর পর ভাতা প্রদান করা হয়। প্রতিবন্ধীদের ৭৫০ টাকা মাসিক হারে ৩ মাসে ৪০ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা, ৫০০ টাকা হারে বয়স্কদের তিন মাসে ৬০ লাখ ৯ হাজার ও বিধবাদের মাসে ৫০০ টাকা হারে ৩ মাসে ২৫ লাখ ৮৯ করে টাকা বিতরণ করা হয়।
এ বিষয়ে মোসা. আনোয়ারা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন স্বামী মারা গেছেন। বয়স্ক ভাতার কার্ডধারী হিসেবে তিন মাস পর পর ভাতা উত্তোলন করে আসছি।
সে অনুযায়ী গত তিন মাসের ভাতা নিতে এসে জানতে পারি তালিকায় আমি মৃত। এতে বেশ হয়রানির শিকার হচ্ছি। ব্যাংকে ভাতা নিতে গেলে কর্মকর্তারা বলেছেন সমাজসেবা অফিস থেকে পাঠানো তালিকায় আপনাকে মৃত দেখানো হয়েছে। তাই ভাতা বন্ধ। আমি জীবিত থাকার পরও অফিসের ভুলে টাকা তুলতে পারছি না।
এ ব্যাপারে টগরবন্ধ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. শাহীন শেখ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি সমাজসেবা অফিসে গিয়েছিলাম। অফিসের কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করছেন ভাতা চালু করার।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ বজলুর রশিদের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।