নিজস্ব প্রতিবেদক, নরসিংদী খবর ||
ময়মনসিংহের নান্দাইলে আলীউর (৩২) নামে এক যুবকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে টানা সাত দিন ধরে অনশন করছের ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী।
ওই তরুণীর প্রেমিক হলেন, আলীউর নান্দাইল উপজেলার ৪নং চন্ডিপাশা ইউনিয়নের চামারুল্লাহ গ্রামের মো. শাহেদ আলীর ছেলে। আলীউর পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।
সরজমিনে পরিদর্শন করে জানা যায়, বিয়ের দাবিতে অনশন করা তরুণী একই উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। সে উপজেলা সদরের একটি কলেজ থেকে গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
ওই তরুণী গণমাধ্যমকে জানায়, সাত দিন ধরে প্রেমিক আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছিলো। গত চার মাস পূর্বে রং-নাম্বারে ও ফেসবুকের মাধ্যম পরিচয় হয় একে অপরের সাথে। পরিচয় থেকে প্রেম।
এক পর্যায়ে ময়মনসিংহ পার্কে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ময়মনসিংহ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে করে আলীউর ও তরুণী।
এই ঘটনার পর থেকেই মেয়েটি আলীউরকে বারবার বিয়ে করার তাগিদ দেন। এক পর্যায়ে একাধিকবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত চার মাসে প্রতারক প্রেমিক আলীউর একাধিকার ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন।
সর্বশেষ গত ২৫ জুলাই ময়মনসিংহ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে অন্তরঙ্গ সময় কাটান আলীউর ও তরুণী।
ভুক্তভোগী তরুণী আরও জানায়, গত ২৫ আগস্টের পর থেকে ময়মনসিংহ থেকে আসার কয়েকদিন পর থেকেই হঠাৎ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে আলীউর। এমনকি ফোনেও তরুণীকে ব্লক করে । তারপর গত ১৭ আগস্ট বিয়ের দাবিতে আলীউরের বাড়িতে এসেছিলাম। তখন আলীউরের পরিবারের লোকজন ও আরও কিছু লোকজন আমাকে জোর পূর্বক আলীউরের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন এবং আমার হাতে থাকা মোবাইল, যার মধ্যে আমার ও আলীউরের অনেক ছবি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো।
তিনি বলন, আমার ফোনটি আলীউরের লোকজন জোর করে আমার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেন। আলীউর বাড়িতে আসলে আমার সাথে যোগাযোগ করবে বলে আলীউরের পরিবার আমাকে জানায়। কিন্তু বেশ কয়েকদিন চলে গেলেও আলীউর বা তার পরিবারের লোকজন আমার সাথে কোন যোগাযোগ করেননি। আমি গত ৩০ আগস্ট থেকে আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর সিংরইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, চন্ডিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দীন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে, স্থানীয় ইউপি সদস্য মতিউর রহমান সেজু, ইউপি সদস্য শিহাব উদ্দিন রাসেল, ইউপি সদস্য খসরু ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ প্রায় হাজার খানেক মানুষের উপস্থিতিতে আলীউরের বাড়িতে সালিশ দরবার হয়।
সালিশ দরবারে উপস্থিত ছিলেন না অভিযুক্ত প্রতারক প্রেমিক আলীউর। সালিশ দরবারে উপস্থিত আলীউরের বাবাসহ সকলের সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় অভিযুক্তকে ৫০ শতাংশ জমি সাফ-কাবলা লিখে দিয়ে বিয়ে করতে হবে আলীউরকে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলীউরের কোন সন্ধান পাচ্ছে না বলে জানান আলীউরের বাবা শাহেদ আলী।
এ কারণে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন ওই তরুণী। আলীউরের বড় ভাই আজিজুল ইসলাম জানান, দরবারিরা বাড়িতে এসে সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে কোথায় কি করেছে সেটা তো আমরা জানি না। তার সাথে যোগাযোগও করতে পারছি না।
মেয়েটি সোমবার পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ বিষয়ে আলীউরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আলীউরের মুঠোফোনে কল দিলে আলীউর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে চন্ডিপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দীন ভূঁইয়া জানান, বিষয়টি এখনো সমাধান হয়নি।
এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, ছেলের বড় ভাই থানায় অভিযোগ জানালে সোমবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে মেয়েটিকে শাহেদ আলীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে, পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে
এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ । রিপু /নরসিংদী খবর