শেরপুরে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় মায়ের সঙ্গে অভিমান করে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে একই দিন বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহতের নাম কানিজ ফাতেমা কাশমি (১৪)। সে শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির প্রভাতী ‘খ’ শাখার ছাত্রী। তার বাবা আবুল কাশেম ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা। তিনি শেরপুর আমিন অ্যান্ড কোম্পানিতে বিজনেস ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। তিনি জেলা শহরের সিংপাড়া মহল্লায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার বিদ্যালয়ের অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়। ফলাফলে নিহত স্কুলছাত্রী বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, পদার্থ ও জীব বিজ্ঞানের সৃজনশীল পরীক্ষায় ফেল করে। লজ্জায় বাড়ির কাউকে সে রেজাল্ট জানায়নি। পরে সোমবার (৪ জুলাই) এক বান্ধবীর কাছ থেকে কাশমির রেজাল্ট জানতে পারেন তার মা। এ সময় বাড়িতে এসে মেয়েকে বকুনি দেন। পরে এ ঘটনার দিন রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে কাশমি।
এদিকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে বাবা আবুল কাশেম জামালপুর চলে যান। অন্যদিকে মেয়েকে বাড়িতে রেখে ছোট ছেলেকে নিয়ে মাদরাসায় চলে যান মা। ঘণ্টাখানেক পরে বাড়িতে এসে তিনি ঘরের দরজা খোলার জন্য মেয়েকে ডাকতে থাকেন। এ সময় কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়ির মালিককে ডেকে আনেন। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান উড়না পেঁচিয়ে ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলে আছে কাশমি। এ সংবাদ পেয়ে সদর থানা পুলিশ এসে মরদেহ নিচে নামিয়ে আনে। পরে স্থানীয় চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান কাশমি মারা গেছে। পরে সুরৎহাল শেষে পুলিশ মরদেহ জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
বাড়ির মালিক জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিহত কাশমি খুব ভালো মেয়ে। মা ও বাবা তাকে খুব আদর করত। সম্ভবত রেজাল্ট খারাপ হওয়ার কথা শুনে মা একটু রেগে গিয়ে কিছু কড়া কথা বলেছিল। এতেই মেয়ের অভিমান।
শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. হান্নান মিয়া বলেন, মায়ের তিরস্কারে স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।