গাজীপুরের টঙ্গীতে প্রাইভেটকারের ওপর মালবাহী ট্রাক উল্টে পড়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন একই পরিবারের চারজন। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে চেরাগআলী কাদেরিয়া টেক্সটাইলের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রাইভেটকারের ওপর উল্টে পড়ে একটি মাল বোঝাই ট্রাক। তবে আকস্মিকভাবে বেঁচে যায় প্রাইভেটকারে থাকা চালকসহ চারজন।
এসময় পালিয়ে যায় ট্রাক চালক ও হেলপার। তাৎক্ষণিক প্রাইভেটকারের যাত্রীদের উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। প্রাইভেটকারের যাত্রীরা হলেন, চালক মো. শামিম (৪০), তার স্ত্রী শান্তা আক্তার (৩৪), তাদের ১৬ বছর বয়সী বড় মেয়ে সামসাদ নাহার আনুস্কা ও সাড়ে তিন বছর বয়সী ছেলে আহনাফ হোসেন শুদ্ধ। শামিম পেশায় একজন উবার চালক। তাদের মেয়ে সামসাদ নাহার আনুস্কা মিরপুর বাংলা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২২ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
টঙ্গী পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) আবুল কাশেম এ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার রাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারযোগে ঢাকার মিরপুর থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের পাবরিয়া চালা গ্রামে শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছিলেন শামিম।
পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চেরাগআলি এলাকায় কাদেরিয়া টেক্সটাইলের সামনে একটি পোল্ট্রি ফিড বোঝাই মালবাহী ট্রাক গর্তে পড়ে উল্টে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়েমুচড়ে গেলেও গাড়িতে থাকা কেউই গুরুতর আহত হয়নি। ট্রাক চালক ও হেলপার পালিয়ে যাওয়ায় ট্রাক ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রাইভেটকার উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এ ঘটনায় পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেন জানান তিনি।
মো. শামিম বলেন, রাস্তায় খানাখন্দ ও বিআরটির নির্মাণকাজের জন্য চেরাগআলী এলাকায় যান চলাচলে ধীরগতি ছিল। হঠাৎ কিছু বুঝে উঠার আগেই একটি মালবাহী ট্রাক আমাদের বহনকারী প্রাইভেটকারের ওপর উল্টে পড়ে। এ সময় আমরা গাড়ির ভেতরেই আটকা পড়ি। পরে গাড়ির দরজা ভেঙে বের হই।
শামিম আরও বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের কয়েকমাস আগে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গাড়িটি ক্রয় করে ঢাকায় উবারে চালাইতাম। করোনায় লকডাউনের কারণে গত দুই বছরে গাড়ির কিস্তিও পরিশোধ করতে পারিনি। এখনও প্রায় সাত লাখ টাকার কিস্তি বকেয়া আছে ব্যাংকের। এরই মধ্যে দুর্ঘটনায় একমাত্র আয়ের উৎস গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হল। এখন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কিভাবে থাকবো তা-ই ভাবছি।
দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা শান্তা আক্তার বলেন, গাড়িতে চালকের পাশের আসনে ছোট ছেলে শুদ্ধকে নিয়ে বসে ছিলাম। স্কুল পড়ুয়া মেয়ে আনুস্কা পেছনের আসনে বসা ছিল। মুহূর্তের মধ্যে ট্রাকটি আমাদের গাড়ির ওপর উল্টে পড়ে। এরকম দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরার কথা না। আল্লাহর অশেষ কৃপায় পরিবারের সবাই অক্ষত আছি।