ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনে কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া আসতে শুরু করেছে লালবাগের পোস্তায়। তবে অন্যান্য বছর এমন সময়ে চামড়ার গাড়ির কারণে পোস্তা এলাকায় যানজট লেগে থাকলেও এবছর দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। রাস্তার ওপর চামড়ার উপস্থিতিও দেখা গেছে অনেক কম। এ বছর পশুর দাম বেশি হওয়ায় কোরবানি কম হয়েছে, আর তাই চামড়াও কম আসছে- এমন দাবি ব্যবসায়ীদের। তবে খাসি ও ছাগলের চামড়া কেনার লোক না থাকায় রাস্তার পাশে সেগুলো পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এবার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাভারের হেমায়েতপুরে অনেক চামড়া চলে যাওয়ায় পোস্তায় চামড়া কম আসছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে চামড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপাদানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী টার্গেটের চেয়ে কম চামড়া কিনছেন বলে জানিয়েছেন।
দুপুর থেকে চামড়া কেনাবেচা কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ও পোস্তার মালিকরা। চামড়ার এই কেনাবেচা চলবে আগামী এক মাস।
আজ সোমবার (১১ জুলাই) সকালে লালবাগের পোস্তা এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
চামড়া ব্যবসায়ী দীন মোহাম্মদ শুভ বলেন, সকাল থেকে চামড়া খুব কম এসেছে। আগে ঈদের দিন, ঈদের দ্বিতীয় দিন পলাশীর মোড় পর্যন্ত চামড়ার গাড়ির জ্যাম লেগে যেত। ঈদের দিন রাত ৪টা পর্যন্ত কেনাবেচা করতাম। কিন্তু এবার রাত ১২টার মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, পশুর দাম বেশি হওয়ায় মানুষ কোরবানি কম করেছে। বেলা গাড়ালে কিছু চামড়া আসতে পারে। আমার টার্গেট ছিল আড়াই হাজার চামড়া কিনব। কিন্তু এখন ১৪০০-১৫০০ চামড়া কেনার কথা ভাবছি। ঝুঁকি নিতে চাইছি না।
আরেক ব্যবসায়ী জয়নাল আহমেদ বলেন, এবার টার্গেট ছিল ৬ হাজার চামড়া কিনব। কিন্তু কিনেছি ৪ হাজার। লবণের প্রতি বস্তায় দাম বেড়েছে ৩৫০-৪০০ টাকা। আগে এক বস্তার দাম ছিল ৭০০ টাকা, এখন ১০৫০-১১০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ট্যানারিগুলোতে টাকা আটকে থাকায় ঝুঁকি নিয়ে বেশি চামড়া কিনতে পারছি না। এখনও কয়েকটা ট্যানারি মালিকের কাছে ৫-৬ কোটি টাকা পাওনা আছি। তারা বছরে ৫ শতাংশ করে দেয়। ১ কোটি পাওনা থাকলে বছরে দেয় ৫ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সভাপতি আফতাব খান বলেন, দাম বেশি হওয়ায় এবার পশু কোরবানি অন্য বছরগুলোর তুলনায় কম হয়েছে। এবার লবণের দাম বেশি, মজুরি বেশি, চামড়া বহন করা ট্রাকের ভাড়াও বেশি। এর প্রভাব পড়েছে চামড়ার বাজারে। তারপরও বিশ্ব বাজারে চাহিদা থাকায় আশা করছি খুব বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।