ছবি সংগ্রহীত
পদ্মা সেতুতে মিনিট্রাক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় আরও ২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন
আরও পড়ুনঃ ??
এখনো ঘরের বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন সেই অধ্যক্ষের ৩ কন্যা
জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনায় এখনো ভয়ে আছে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের পরিবার। এখনো ঘরের বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন সেই অধ্যক্ষের ৩ কন্যা।
বড় মেয়ে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্রী শ্যামা রানী বিশ্বাস বলেন, যেখানে আমার বাবা বাড়িতে আসতে নিরাপদ মনে করছেন না। সেখানে এই মুহূর্তে কলেজে যাওয়া কতটা নিরাপদ সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। এখনো শতভাগ নিরাপদ মনে করছি না;
তাই আমরাও ঘরের বাইরে বের হই না। এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি আমাদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে আমার বাবাকে যথাযথ সম্মান দিয়ে কলেজে ফেরার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হলেই তিনি ক্লাসে যোগ দেবেন।
তিনি আরও বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে সারা দেশের মানুষ দেখেছে শত শত পুলিশ আর মানুষের সারির মধ্য দিয়ে আমার বাবার গলায় জুতার মালা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, আর তার দুটি হাত উঁচিয়ে ক্ষমা প্রার্থনার করছেন। সেই পরিবেশে ক্লাসে গিয়ে কীভাবে স্বস্তি পাবেন তিনি। এ কথা বলতে বলতে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন অধ্যক্ষের কন্যা।
একই ব্যাপারে অধ্যক্ষের দ্বিতীয় কন্যা এসএসসি পরীক্ষার্থী জুই বিশ্বাস ও অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া কনিষ্ঠ কন্যা দোলা বিশ্বাস বলেন, নিরাপত্তার অভাবে তারা প্রাইভেট পড়তে যেতে পারেন না। স্কুল খুললেও ক্লাসেও যাবেন না। এমনকি তারা ঘরের বাইরে বের হতে সাহস পান না। বিশেষ কোনো প্রয়োজনে পরিবারের কোনো সদস্য বাইরে বের হলে অতিগোপনে গা-ঢাকা দিয়ে বের হন বলে জানান তারা।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুন অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। ওই দিন কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় ওরফে বাপ্পী রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে পোস্ট করেন,‘প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম’। বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে কলেজের কিছু ছাত্র তাকে সেটি মুছে (ডিলিট) ফেলতে বলেন।
এরপর ১৮ জুন সকালে অভিযুক্ত ছাত্র কলেজে আসলে তার সহপাঠীসহ সব মুসলিম ছাত্র তার গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাৎক্ষণিক বহিষ্কারের দাবি তুলে অধ্যক্ষের নিকট বিচার দেয়। কিন্তু ওই সময় ‘অধ্যক্ষ একই সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় তাকে রক্ষা করার চেষ্টায় ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন’ এমন কথা রটানো হলে উত্তেজনা তৈরি হয়।
এ সময় বিষয়টি কলেজের গণ্ডি ছাড়িয়ে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা অভিযুক্ত ছাত্রের সঙ্গে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও ক্ষোভে-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। একপর্যায় পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতার মধ্যে দফায় দফায় তুমুল সংঘর্ষে দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।
ওই সময় বিক্ষুব্ধ জনতা কলেজের অধ্যক্ষসহ হিন্দু শিক্ষকদের ৩টি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় ঘটনাস্থলে
পৌঁছলে তাদের উপস্থিতিতেই উত্তেজিত জনতা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত ছাত্রের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায়ও জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করেছিল
সূত্র যুগান্তর