ছবি সংগ্রহীত
ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা বাড়লো ছবি: সংগৃহীত
ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে প্রতি ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগে ছিল ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা।
সোমবার (২৫ জুলাই) টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ানোর দিনে ১৩ কোটি ২০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন দামকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আন্তঃব্যাংক দর।
ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ৭ টাকারও বেশি। আর খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে এসেছে ১৬৪ কোটি ২৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। যা আগের মাসে (জুন) এসেছিল ১৮৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলারের দাম ২৫ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ আজ প্রতি এক ডলার বিক্রি করা হচ্ছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সায়। নতুন এ দামেই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকগুলোর এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের বৈঠক হয়।
পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ডলারের বাজার স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। এখনো প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বিদেশে আটকে আছে। এ দেড় বিলিয়ন ডলার এখনো আসেনি বা আনা হয়নি। তাছাড়া ব্যাংকগুলোর অকেজো অ্যাকাউন্টে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট রিকনসলেশন হিসাবে আটকে আছে।
সবমিলিয়ে ব্যাংকগুলোকে সাড়ে ১০ বিলিয়ন ডলার আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো যদি এসময়ে এসব ডলার বিদেশ থেকে না নিয়ে আসে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আর ডলার সাপোর্ট দেওয়া হবে না। ব্যাংকগুলোর সাপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন ??
প্রবাসী আয় ইতিবাচক ধারায়, ২১ দিনে এলো ১৫৬০০ কোটি টাকা
সাম্প্রতি সময়ে ডলার সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট কাটার পরিবর্তে আরও ঘনিভূত হচ্ছে। ডলার সংকটের কারণে এ মুহূর্তে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে দেশ। খোলা বাজারের ডলার ৯০ থেকে বেড়ে এখন ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।
এরই মধ্যে সুখবর দিলো প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। ঈদের মাস জুলাই-এ প্রবাসী আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে ১৬৪ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার বা ১৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি এসেছে। গড়ে প্রতিদিন ৭ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় আসছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, চলতি জুলাই মাসে পবিত্র ঈদুল আজহা হওয়ায় প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। এ কারণে এখন পর্যন্ত রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। চলতি জুলাইয়ের প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরে রেকর্ড তৈরি হবে।
তথ্য বলছে, সদ্য বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। যা তার আগের অর্থবছরের (২০২০-২০২১) চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম।
২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের জুন মাসে ১৮৩ কোটি ৭২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এটি তার আগের মাস মে অপেক্ষা ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার কম। চলতি বছরের মে মাসে দেশের প্রবাসী আয় এসেছিল ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।
দেশে ডলার সংকটের কারণে কমছে টাকার মান। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংকগুলোর কাছে ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা রেটে ডলার বিক্রি করছে। আর খোলা বাজারের ডলার ৯০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডলার মার্কেট স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। এখনও প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স বিদেশে আটকে আছে। এ দেড় বিলিয়ন ডলার এখনও আসেনি বা আনা হয়নি। তাছাড়া ব্যাংকগুলোর নষ্ট একাউন্টে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট রিকনসলেশন হিসাবে আটকে আছে।
সবমিলিয়ে ব্যাংকগুলোকে সাড়ে দশ বিলিয়ন ডলার আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো যদি এ সময়ে এসব ডলার বিদেশ থেকে না নিয়ে আসে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক আর ডলার সাপোর্ট দিবে না। ব্যাংকগুলোর সাপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
সোমবার (২৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকগুলোর এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ-এর বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।