গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় হাসপাতালের কর্মী পরিচয় দিয়ে এক নারীর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রতিবেশীদের করোনা ভ্যাকসিন পুশ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে শনিবার বিকেলে শ্রীপুর থানায় জিডি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অভিযুক্ত নাসরিন আক্তার (৩২) স্থানীয় কেওয়া পশ্চিম এলাকার মসজিদ মোড় এলাকায় বসবাস করেন এবং শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করেন বলে এলাকায় প্রচার করেন। পরে হাসপাতাল থেকে টিকার ভায়াল নিয়ে তিনি টাকার বিনিময়ে এলাকায় ভ্যাকসিন পুশ করতে থাকেন।
নাসরিনের ছোট ভাই মোমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রদানে জনবল সংকটের কারণে তার বড় বোন নাসরিন কয়েক দিন আগে খণ্ডকালীন চাকরি পান। দুইদিন আগে তার মা তাজ নাহারের জন্য হাসপাতাল থেকে করোনা ভ্যাকসিনের একটি ভায়াল নিয়ে আসেন। কিন্তু প্রতিবেশীদের ওই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে তিনি টাকা নিয়েছেন কিনা তার জানা নেই।
তবে শনিবার হাসপাতালে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘একদিন আগে হাসাপাতালে টিকা নিয়ে গোলযোগের সময় এক শিশি ভ্যাকসিন নিচে পড়ে গেলে তা কুড়িয়ে নিই। পরে কৌশলে তিনটি সিরিঞ্জও বাসায় নিয়ে যাই। এটা আমার অন্যায় হয়েছে। যেহেতু টিকা নষ্ট হয়ে যাবে তাই ওই টিকা অন্যদের দেহে পুশ করে দিই।’তবে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, ‘স্থানীয় এক যুবকের ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি।’
ভ্যাকসিন গ্রহণকারী নাসরিনের প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের মেয়ে ফাহিমা আক্তার (১৯) জানান, গত ২৪ তারিখ হাসপাতালে প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে টিকা নিতে না পেরে বাসায় ফিরে আসেন তিনি। সন্ধ্যায় জানতে পারেন নাসরিন বাসায় এনে করোনা ভ্যাকসিন দিচ্ছেন। পরে সেখানে গেলে টিকা আনার খরচ বাবদ ১০০ টাকা নিয়ে তাকে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেন।
একই কথা বলেন, প্রতিবেশী রওশনারা বৃষ্টি (৩০)। প্রতিবেশী দেলোয়ার হোসেনও টিকার জন্য নাসরিনের কাছে গেলে তার কাছে এক ডোজ করোনার টিকার জন্য ৩০০ টাকা চান নাসরিন। কিন্তু টিকা প্রদানের কোনো কাগজপত্র দিতে সম্মত না হওয়ায় তিনি টিকাগ্রহণ করেননি।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো. খায়রুজ্জামান জানান, খবরটি আমিও শুনেছি। এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, নাসরিন আমাদের কোনো কর্মী নয়। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।