বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন

খুব সহজেই দামি মসলা আদা চাষ করা শিখে নিন!

রাব্বি মল্লিক / ১৬০ বার
আপডেট : শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

আদা একটি উদ্ভিদ মূল যা মানুষের মসলা এবং ভেজষ ঔষুধ হিসাবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে আদা অন্যতম। দিন দিন আদা চাষ বানিজ্যিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সকলে জেনে নিন যে পদ্ধতিতে আদা চাষে শতভাগ সফলতা আসে:

জমি ও মাটি নির্বাাচন: পানি নিকাশের সুব্যবস্থা আছে এমন উঁচু বেলে-দো-আঁশ ও ও বেলে মাটি আদা চাষের জন্য খুবই উপযোগী।

বীজ রোপণ: ফাল্গুন থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত লাগানো যায়। সাধারণত ১২-১৫ গ্রাম ওজনের ১-২টি কুঁড়ি বিশিষ্ট কন্দ লাগানো হয়ে থাকে। ৪০-৪৫ সে.মি. দূরে দূরে সারি করে ২০ সে.মি. দূরে ৫ সে.মি. গভীরে আদা লাগানো হয়ে থাকে। কন্দ লাগানো পর ভেলী করে দিতে হয়। প্রতি হেক্টরে বীজের প্রয়োজন হয় ১০০০ কেজি।

জাত নির্বাচন: আদা অনুমোদিত কোন জাত নেই। তবে স্থানীয় জাত যেমন-রংপুরী, খুলনা, টেংগুরা জাত চাষ করা হয়ে থাকে।

সার প্রয়োগ: আদার ভালো ফলন পেতে হলে জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রতি হেক্টরে গোবর সার ৪ থেকে৬ টন, ইউরিয়া ২০০ থেকে ২৪০ কেজি, টিএসপি ১৭০ থেকে ১৯০ কেজি, এমওপি ১৬০ থেকে ১৮০ কেজি প্রয়োগ করতে হয়। জমি প্রস্তু’তির সময় সমুদয় গোবর, টিএসপি ও ৮০ থেকে ৯০ কেজি এমওপি সার প্রয়োগ করতে হয়। কন্দ লাগানোর ৫০ দিন পর ১০০ থেকে ১২০ কেজি হারে ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।

লাগানোর ৯০ দিন ও ১২০ দিন পর যথাক্রমে ২য় ও ৩য় কিস্তি-র সার উপরি প্রয়োগ করা হয়। ভেলা সামান্য কুপিয়ে ১ম কিস্তি-র সার প্রয়োগ করে দেওয়ার পর আবার ভেলা করে দিতে হয়। ২য় ও ৩য় কিস্তি-র উপরি প্রয়োগের সময় প্রতি হেক্টরে প্রতিবারে ৫০ থেকে ৬০ কেজি ইউরিয়া ও ৪০-৪৫ কেজি এমওপি সার প্রয়োগ করা হয়। ২য় ও ৩য় কিস্তি-র সার সারির মাঝে প্রয়োগ করে মাটি কোঁদাল দিয়ে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে সামান্য পরিমাণ মাটি ভেলীতে দিতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা: আদা লাগানোর পর বৃষ্টি হলে সেচের প্রয়োজন হয় না। তবে বৃষ্টি না হলে ও মাটিতে রসের অভাব থাকলে নালাতে অবশ্যই সেচ দিতে হবে এবং ২ থেকে ৩ ঘন্টা পর নালার অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে। বৃষ্টির পানি যেন জমতে না পারে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা অবশ্যই রাখতে হবে। আগাছা দেখা দিলে তা তারাতারি পরিষ্কার করতে হবে। সার উপরি প্রয়োগের সময় আগাছা পরিষ্কার করে প্রয়োগ করা অনেক ভালো।

আদা চাষে রোগ দমন: আদার জমিতে তেমন কোন রোগ-বালাই দেখা যায় না। তবে আদায় প্রধানত রাইজোম পচা রোগ দেখা দিয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হলে মাটি বরাবর গাছের গোড়া পচে যায় এবং পাতা হলুদ হয়ে যায় ফলে আদা পচে গিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত রস বের হতে থাকে।

প্রতিকার: রোগমুক্ত বীজ আদা রোপণ করতে হবে, একই জমিতে বারবার আদা চাষ করা যাবে না। জমিতে পানি নিকাশের ব্যবস্থা অবশ্যই রাখতে হবে । প্রতি লিটার পানিতে তিন গ্রাম রিডোমিল গোল্ড মিশিয়ে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে।

আদা চাষে পোকা দমন: আদা গাছে কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ হতে পারে। কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা দমনের একপ্রকার কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।

ফসল সংগ্রহ: আদা লাগানোর ৯-১০ মাস পর উঠানোর উপযোগী হয়। গাছের প্রায় সব পাতা শুকিয়ে গেলে আদা তোলা হয়। ফলন প্রতি হেক্টরে ১২-১৩ টন।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাংলাদেশ খবর মিডিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। রাব্বি মল্লিক/এনজে

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ