মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন

কক্সবাজারে এই’ডসে আ’ক্রান্ত ৭১০, রোহিঙ্গা ৬১২ জন

প্রতিনিধির নাম / ১৮১ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০২২

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে এইচআইভি (এইডস) ভা’ইরাসের প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে এ রোগ। গেল জুন মাসেই এইচআ’ইভি ভাই’রাসে আ’ক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন।

এনিয়ে ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত এইড’স রোগে আক্রা’ন্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১০ জন। এরমধ্যে আক্রা’ন্ত ৬১২ জনই রোহিঙ্গা। আর সব মিলিয়ে মা’রা গেছেন ১১৮ জন। গতকাল সোমবার (২৫ জুলাই) বিষয়টি

নিশ্চিত করেছেন, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান। সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলায় ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এইচআ’ইভি

ভাইরা’সে আ’ক্রান্ত ৭১০ জনের মধ্যে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছে ৫০৫ জন ও উখিয়া হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে ২০৫ জন। এদের মধ্যে ৬১২ জন রোহিঙ্গা, বাকি ৯৮ জন স্থানীয় নাগরিক। আর মারা যাওয়া ১১৮ জনের মধ্যে ৬১ রোহিঙ্গা এবং ৫৭ জন স্থানীয় বাসিন্দা।

জানা গেছে, এই’চআইভি ভাইরা’সে আ’ক্রান্ত রো’হিঙ্গার সংখ্যা বেশি। রোহি’ঙ্গাদের অসচেতনতার কারণে তাদের কাছ থেকে এই রোগ কক্সবাজারের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের

অবাধ চলাফেরার কারণে এই রোগের সংখ্যা কক্সবাজারে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউসে কয়েক হাজার রোহি’ঙ্গা তরুণীর যাতায়াত। আর এ কারণে এই রোগটি এখানে ছড়াচ্ছে বলে ধারণা করছেন অনেকেই।

এ ছাড়াও পর্যটন শহর হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা আয়ের উদ্দেশ্যে যৌ’নকর্মী’দের ব্যাপকহারে কক্সবাজার আগমন ও এই’ডস বিস্তারের আরেকটি অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তালিকায় শুধু যুবক যুবতী নয় আছে শিশুও। কারণ, কোনোভাবে এই ভাই’রাস তাদের শরীরে গেছে। ভাসমান যৌ’ন’কর্মী ছাড়াও প্রবাসী অনেকেই এই’ডস আক্রা’ন্ত হয়ে দেশে ফিরছেন।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, রোহিঙ্গারা যেহেতু কক্সবাজার এলাকা জুড়ে রয়েছে; সেহেতু তাদের সঙ্গে স্থানীয়দের মেলামেশা হচ্ছে। এমনকি যৌ’ন সম্পর্কেও জড়াচ্ছে

অনেকে। এ ছাড়াও কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় শত শত রোহিঙ্গা নারীদের অবাধ বিচরণ। যদি সচেতনতা অবলম্বন ও যৌ’নকর্ম থেকে বিরত থাকা যায় তবে এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান জানান, বিশ্ব এখন রোহিঙ্গাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি তাদের সুন্দর স্বাস্থ্য সুরক্ষার। রোহি’ঙ্গা আসার আগে তেমন এই রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল না। রোহিঙ্গাদের কাছে এইচআইভি

রোগের প্রাদুর্ভাব থাকার কারণে ও তাদের অবাধ মেলামেশা ও এক জায়গা বেশি সংখ্যক জনবল হওয়ার কারণে এইচআইভি ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই রোগটি দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ছে। যারা আক্রা’ন্ত হয়েছে তাদের আলাদা না করার কারণে এই রোগ আরও ব্যাপকভাবে ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, যারা আ’ক্রান্ত হয়েছে তাদের আলাদা রাখতে হবে। তাদের যদি আলাদা করা না হয় তবে দেশের জন্য এটি বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তবে এ নিয়ে জাতীয় এই’ডস এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এইডস-এসটিডি) কাজ করছে। এই প্রোগ্রামে এটিকে আমরা বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছি। এই চ্যালেঞ্জে রয়েছে- আ’ক্রান্ত ব্যক্তিদের শনা’ক্ত করে তাদের চিকিৎসা প্রদান করা এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ