শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ১২:৫৪ অপরাহ্ন

আমি খাব, প্রতিবেশী খাবে না-এটা যেন না হয়’

প্রতিনিধির নাম / ১০২ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২

ছবি সংগ্রহীত
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু আমি খাব, আমি ভালো থাকব, আমি শান শওকতে থাকব, আর আমার পাড়া-প্রতিবেশী খাবে না-এটা যেন না হয়।

সোমবার (৪ জুলাই) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটা নেতাকর্মী যেন কোনো কষ্ট না পায়, দেশের মানুষ যেন কষ্ট না পায়, আমরা সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী, বাংলাদেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তর করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কেউ আর হতদরিদ্র, গৃহহীন ও ক্ষুধার্ত থাকবে না, সেজন্য সরকারের পদক্ষেপে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, কোনো এলাকায় যেন একটা মানুষও গরিব না থাকে, ভিক্ষা করে খেতে যেন না হয়, কেউ যেন কষ্ট না পায়, তাদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চলমান করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দ্বিগুণ আঘাতের কারণে বিশ্ব এখন এক সংকটময় অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কাজেই প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে এমন কি আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের মতো বড় দেশগুলো এখন খাদ্য সংকটে ভুগছে। আমরা এখনও ভালো অবস্থানে আছি এবং ভালো থাকার চেষ্টা করছি, এরজন্য দেশবাসীর সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী আবারও সকলকে দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, প্রত্যেকেই যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে কিছু না কিছু উৎপাদন করে এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা রাখে তাহলে বাংলাদেশে কোনো অভাব থাকবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে, প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে ঘর করে দিয়েছে এবং সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। যদিও দেশে-বিদেশে কিছু লোক আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের দোষ কী? কী অপরাধে তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে ব্যর্থ করতে চায়?’
তৃণমূল কর্মীদের দলের লাইফলাইন হিসেবে উল্লেখ করে দলের সভাপতি বলেন, ‘আমাদের মাঠকর্মীরা সব সময় কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারাই কিন্তু পার্টিটাকে ধরে রাখে এই কথাটা মনে রাখতে হবে।’

তিনি দলের নেতৃবৃন্দকে দলের প্রতিটি কর্মীর খোঁজ-খবর নিতে এবং প্রয়োজনে তাদের পাশে দাঁড়াতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে জিয়া, খালেদা, এরশাদ, আইয়ুব ও ইয়াহিয়া খানের শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের কথা স্মরণ করেন এবং শত নির্যাতনের মধ্য দিয়েও আওয়ামী লীগ সংগঠন সব সময়ই শক্তিশালী বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গত ২৫ জুন পদ্মা সেতুতে যান চলাচল উদ্বোধনের পর আজ সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে পদ্মা পাড়ি দিয়ে সড়কপথে প্রথমবারের মতো গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তার পৈতৃক বাড়িতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ।

জাতির পিতার সমাধিসৌধে শেখ হাসিনা ফাতেহা পাঠ করেন এবং জাতির পিতা এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাযজ্ঞের অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী এর আগে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার মহান স্থপতির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন
সূত্র আর টিভি

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ