উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।অন্যদিকে গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীতে শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবনে শাবিপ্রবির শিক্ষকপ্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আলোচনার প্রস্তাব দেন শিক্ষামন্ত্রী।এর আগে সন্ধ্যায় বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে শাবিপ্রবির শিক্ষক প্রতিনিধিদলে ছিলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুলসি কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক মহিবুল আলম,
ভৌত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার, ফলিত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন. খায়রুল ইসলাম রুবেল।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তানতুল্য।আমারা জানতে পেরেছি অনশন করে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
এজন্য তাদের পিতা-মাতার মতো আমরাও উদ্বিগ্ন।আমরা চাই তারা অনশন প্রত্যাহার করুক। আলোচনার মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে বা আমার পক্ষ থেকে যদি অন্য কাউকে যেতে হয়, আমরা আলোচনায় বসতে রাজি আছি। কথা বলা যাবে না, এটি কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
মন্ত্রী আরও বলেন, এ আন্দোলনে অন্য কারো ইন্ধন রয়েছে কি না, অন্য কারো হাত রয়েছে কি না তা আমি জানি না। আপনারা (সাংবাদিকরা) এটি খতিয়ে দেখতে পারেন।
শিক্ষার্থীরা অনশন করছে এতে আমরা কষ্ট পাচ্ছি। আবার শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে যে আচরণ করছে তাও গ্রহণযোগ্য নয়।
এদিকে, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এবার গণঅনশনের ঘোষণা দিয়েছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইয়াসের সরকার।রাত ৮টা থেকে তাদের এই গণঅনশন কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে ইয়াসের বলেন, আমাদের ২৩ জন শিক্ষার্থী অনশনের ৭৫ ঘণ্টা অতিবাহিত করলেও ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এখনো পদত্যাগ না করে স্বপদে বহাল থেকেছেন। তাই আমরা সব শিক্ষার্থী সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভিসির পদত্যাগের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত গণঅনশন চালিয়ে যাবো।
জানা গেছে, অনশনরত ২৩ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
উল্লেখ্য, গত রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।এরপর থেকেই উত্তপ্ত হতে শুরু করে ক্যাম্পাস।